প্রত্যেক
জাতির জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা
একটি চলমান প্রক্রিয়া |শিক্ষার মান উন্নয়ন ও
আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি জাতিকে করা
যায় সমৃদ্ধশীল | বর্তমানে
পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে
সমৃদ্ধ জাতি গড়ার প্রত্যয়ে বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পুরাতন
ঢাকার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়ে আছে |স্কুলটির অবস্থান
রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থল
বংশাল থানার অন্তর্গত ঐতিহ্যবাহী বংশাল
বড় মসজিদের বিপরীতে | বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাফল্যের
কথা সবারই জানা | এই বিদ্যালয়টি পরিপূর্ণ
করে গড়ে তোলার ও সফলতার ইতিহাস
একদিনে হয় নাই |এই
বিদ্যালয়টি গড়ে তোলার পিছনে
রয়েছে এলাকারা গণ্যমান
ব্যক্তিবর্গের অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিঃস্বার্থ প্রয়াস ও শিক্ষার্থীদের যথাযথ
মেধা |একটু পিছন ফিরে
তাকালেই জানতে পারা যাবে এই
স্কুলের যাত্রা কোথা থেকে শুরু
|১৯৮৩ সালে অত্র এলাকার
বিশিষ্ট ব্যক্তি জনাব ডাক্তার ওবায়দুর
রহমান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন |আর তার এই
অনুভূতির জায়গা থেকেই তার উদ্যোগেই এলাকার
বিদ্যোৎসাহী গণমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়
বংশাল জুনিয়র গার্লস স্কুল |মূলত সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ সমাপ্ত করে
অনেক মেয়ে শিশু উচ্চ বিদ্যালয়ে
শিক্ষার সুযোগ পায় না| এলাকার
মেয়েরা যাতে একই অবস্থানে
থেকে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার
সুযোগ পায় সেই লক্ষ্য
থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণীর শুরু
হয় পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এগিয়ে
যেতে যেতে উচ্চ বিদ্যালয়ের
অনুমোদন পায় ১৯৮৯ সালে |সেই সময় প্রথম
প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন মিনু রহমান |
একটি বিশুদ্ধ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
জন্য একজন প্রধান শিক্ষিকার
প্রয়োজনে ১৯৯১
সালে বিধি মোতাবেক নিয়োগ
প্রাপ্ত হন জনাব জিন্নাত-উস-
সালেহা আর উনার সময়েই
১৯৯২ সালে বিদ্যালয় থেকে
প্রথম এস.এস.সি বোর্ড পরীক্ষা
দেয়া হয় এবং ১৯৯৩
সালে এই স্কুলটি এম.
পি. ও ভুক্ত হয় |
মাধ্যমিক
বিদ্যালয় পরিচালনা এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা
বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়ের ভবনটি সম্প্রসারণ
করার প্রয়োজন দেখা দেয় |১৯৯৮
সালে উনার সহযোগিতায় এবং তৎকালীন
ম্যানেজিং কমিটির তত্ত্বাবধানে সম্মুখভাগ
নির্মাণের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পায় একটি নতুন
রূপ |জিন্নাত-উস-সালেহা সুদীর্ঘ প্রায় ২২ বছর তিনি
প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন |২০১৩
সালে তিনি অবসরে গেলে
সহ প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন |২০১৬
সালে নতুন প্রধান শিক্ষিকা
হিসাবে নিয়োগ পান সেতারা বেগম
|তিনি অদ্যবধি
কর্মরত আছেন |১৯৮৩ থেকে ২০২৫
পর্যন্ত এই দীর্ঘ পথ
চলায় পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ের সক্রিয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বৃন্দ এবং বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিত্ব হিসেবে যাদের
সহযোগিতায় এ বিদ্যালয়টি গর্বের
সাথে নারী শিক্ষার একটি
ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলমান আছে তাদের নাম
উল্লেখ না করলেই নয়
|
জনাব
মোঃ হোসেন, জনাব মোঃ সিরাজ
উদ্দিন,জনাব মোঃ আমির
উল্লাহ,জনাব মোঃ হক
,জনাব হাজী মোহাম্মদ মোন্নাফ
, জনাব
মোঃ সোলায়মান ,জনাব মোহাম্মদ ইলিয়াস,
জনাব মোঃ দেলোয়ার হোসেন
, জনাব ডাক্তার হাফিজুর রহমান ,জনাব ডাক্তার সাখাওয়াত হোসেন
আনু ,জনাব সালাউদ্দিন ,জনাব
জামাল সহ আরো
অনেকে |দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ে
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এলাকার
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব জনাব হাজী মোহাম্মদ
এনায়েত উল্লাহ | যার অবদান অস্বীকার
করবার নয় |এছাড়া বিদ্যালয়ের
প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার ওবায়দুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ডাঃ ফরিদা বেগম শিক্ষানুরাগী
সদস্য হিসেবে ছিলেন |তিনি তার পিতার
স্মরণে ডাক্তার "ওবায়দুর রহমান বৃত্তি "পরিচালনা করে আসছেন |মেধাবী
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তায় বংশাল বড় মসজিদের পঞ্চায়েত
কমিটির মোতওয়াল্লী জনাব
হাজী মোহাম্মদ আওলাদ হোসেনের সক্রিয় সহযোগিতার কথা না বললেই
নয় ।
পরবর্তীতে
সরকারি নির্দেশনায় রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর সভাপতি হিসেবে কার্য পরিচালনা করেছেন |বিগত মে’২০২৫ থেকে এডহক কমিটির সভাপতি
হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আনোয়ারুল ইসলাম। নারী
শিক্ষা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে
বংশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রভাতী
ও দিবা দুটি
শিফট নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে |এই
প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রীদের সহপাঠ্যক্রমিক
কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সুপ্ত
প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে
|আর তার ফলস্বরূপ সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ ,বিতর্ক প্রতিযোগিতা,
বিজ্ঞান মেলা, বার্ষিক দেয়ালিকা /দেয়াল পত্রিকা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয় |তাছাড়া ছাত্রীদের
প্রয়োজনে রয়েছে লাইব্রেরি ,বিজ্ঞানাগার ,নামাজের ঘর,ব্যবহারিক ঘর
, কম্পিউটার ল্যাব |একঝাক উচ্চ শিক্ষিত, কর্মদক্ষ শিক্ষকের
দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়টি সগৌরবে এগিয়ে চলছে।